শনিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২১, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন
বি নিউজ : চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড় হাতিয়া ইউনিয়ন। এই এলাকায় বড় হাতির সচরাচর দেখা মেলে বলেই এর নাম বড় হাতিয়া হয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। হাতির নামে নামকরণ হলেও এখানে প্রাণীটির কোনো নিরাপত্তা নেই। পান থেকে চুন খসলেই তাড়ানোর নামে হাতি হত্যায় মেতে উঠে স্থানীয়রা। সর্বশেষ গত রোববার রাতে বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে বেঘোরে প্রাণ দিয়েছে আরও একটি হাতি। এর আগে গত সপ্তাহে রামুতে একটি হাতির লাশ উদ্ধার করা হয়। ৬ নভেম্বর চকরিয়ায় তিন বছর বয়সী একটি বন্য হাতিকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। বন্য হাতি লোকালয়ের কাছাকাছি এসে ধানখেতসহ বিভিন্ন ফসল খেয়ে ফেলে ও নষ্ট করে। এজন্য বৈদ্যুতিক শক দিয়ে ও গুলি করে হাতি হত্যার মতো নিষ্ঠুর ঘটনাগুলো ঘটছে। বড় হাতিয়া ইউনিয়নে হাতির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লোহাগাড়া থানার ওসি মো. জাকির। তবে তিনি বনবিভাগের বরাতে দাবি করেছেন, বার্ধক্যজনিত কারণে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লোহাগাড়া উপজেলাধীন বড় হাতিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পাহাড়ি এলাকায় কয়েকজন যুবক বন্য শুকর ধরার জন্য বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতেছিল। সেই ফাঁদেই প্রাণ গেছে অবুঝ হাতির। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) পর্যবেক্ষণ হলো, এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ থেকে এশীয় হাতি বিলুপ্ত হতে বেশি সময় লাগবে না। বন বিভাগের হিসাব মতে, গত এক বছরে হাতি মারা গেছে ১৮টি, এর মধ্যে কক্সবাজার অঞ্চলে অন্তত ১৩টি বন্য হাতি হত্যা করার মতো বর্বর ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া বান্দরবানের লামা এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামে কয়েকটি হাতি মারা গেছে। আইইউসিএনের চলমান হাতি জরিপের প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, দেশে বড় জোর এখন ২০০টি হাতি রয়েছে। অথচ ২০০৪ সালে আইইউসিএনের জরিপ অনুযায়ী, দেশে হাতি ছিল ২৭৯ থেকে ৩২৭টি। এর মধ্যে ১৯৬ থেকে ২২৭টি হাতি বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বাস করে। বাকিগুলো বিচরণ করে ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারজুড়ে। যদিও ভারতীয় সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ায় হাতির বিচরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।